ঢাকা , বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫ , ২৯ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নবীগঞ্জে আওয়ামীলীগের নেতা পরিচয়ে ১৫ বছর প্রধান শিক্ষকের পদ দখল! একই সাথে দুই পদে বেতন উত্তোলন।


আপডেট সময় : ২০২৫-১০-১৩ ১৬:১০:৫৯
নবীগঞ্জে আওয়ামীলীগের নেতা পরিচয়ে ১৫ বছর প্রধান শিক্ষকের পদ দখল! একই সাথে দুই পদে বেতন উত্তোলন। নবীগঞ্জে আওয়ামীলীগের নেতা পরিচয়ে ১৫ বছর প্রধান শিক্ষকের পদ দখল! একই সাথে দুই পদে বেতন উত্তোলন।

নবীগঞ্জ (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ হাজ্বী আঞ্জব আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রিয়াজুল করিম জানুর বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। আওয়ামীলীগের নেতা পরিচয় প্রধান শিক্ষকের পদ দখল করে ১৫ আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন। তিনি একই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ইংরেজী শিক্ষকের পদে বেতন উত্তোলন করেন।
বিগত সরকারের আমলে বিরুদ্ধে এলাকাবাসী একাধিক অভিযোগ সিলেট শিক্ষা বোর্ডের ডিজি, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে দিলেও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কারন তিনি ছিলেন আওয়ামীলীগের পোষ্য নেতা।



সরকার পতনের পর ইদানিং এছাড়া বিদ্যালয়ের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনসুর আহমদ আতিক সিলেট শিক্ষা বোর্ডের ডিজির কাছে লিখিত অভিযোগ করেন, এর প্রেক্ষিতে জেলা শিক্ষা অফিস তদন্ত করেছে এবং প্রাথমিক তদন্ত সাক্ষ্য প্রমান পাওয়া গেলেও এখনও তদন্ত প্রতিবেদন দেয়া হয়নি।


নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নে বড় সাখোয়া গ্রামে অবস্থিত স্বনামধন্য হাজী আঞ্জব আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সুনাম নষ্ট করে ছেন সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ রিয়াজুল করিম জানু! 
অভিভাবক ও এলাকাবাসীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, মোঃ রিয়াজুল করিমের বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, স্কুলের মাটি ভরাটের টাকা আত্মসাত, ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায়, শিক্ষক- কর্মচারীদের সাথে খারাপ আচরন, সরকারী বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষক কর্মচারীদের সাথে খারাপ আচরণসহ বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠাতার কাছে প্রথমে দেয়া হয়। পরে এই অভিযোগ জেলা শিক্ষাকর্মকর্তার কাছে দেয়া হয়েছে, কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি।



উপযুক্ত বিষয়টি এলাকাবাসী বর্তমান স্কুল সভাপতিকে বারবার জানালেও তিনিও তিনি ব্যবস্থা গ্রহন করেননি। এনিয়ে রহস্য বিরাজ করছে, তাহলে কি প্রধান শিক্ষকের এই দুর্নীতিকে ধামাচাপা দিতে চাচ্ছেন সভাপতি।


নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক জানান, স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের জন্য শিক্ষকগণ মনোক্ষুন্ন, এবং সকল সুবিধা থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের বঞ্চিত রাখা হয়। অবৈধ কাজে সম্মতি না দিলে খারাপ আচরণসহ নানাভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাতেন তিনি। 


এসব কারণে তাকে নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রত্যেক শিক্ষক ও কর্মচারীসহ এলাকার শিক্ষানুরাগী, অভিভাবক ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছে। এসব ঘটনা তদন্ত স্বাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানান।



পরিচালনা কমিটির সাবেক এক সদস্য মিছলু মিয়া জানান, অতীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর অভিযোগ প্রদান করা হলেও, রহস্যজনক কারনে নেওয়া হয়নি কোন ব্যবস্থা । তিনি দুটি পদে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ইংরেজী শিক্ষকের বেতন উত্তোলন করেছেন। হাজী আঞ্জব আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক পদে নিয়োগ নেওয়ার পরে তিনি আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয় দিয়ে  ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ দখল করেন। দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ দখল করে  লুটপাট করে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হয়েছেন।


তিনি ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেন উনার ইনডেক্স নং (১০৭১৭৬৯) আবার আওয়ামীলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব নেন। ২০১৯ সালে আওয়ামীলীগের ক্ষমতা দিয়ে আবার সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ নেন ।


একজন সহকারী শিক্ষক বলেন, তার দুর্নীতিরবিরুদ্ধে এই প্রতিষ্টানের সব শিক্ষক ও কর্মচারীরা ২০১৬ সালে এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা হাজ্বী আনওয়ার আলী সাহেবের বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। উনি সহকারী ইংরেজি শিক্ষক এর বেতন পান। অনেকই বলছেন একজন মাদক সেবি লোক কিভাবে শিক্ষকতা করেন। আমরা চাই ২০১০ থেকে ২০২৫ সালের আয় এবং ব্যায়ের এর সঠিক তদন্ত করা হিসাব নিকাশ বাহির করা হউক! তিনি ১৫ বছর স্কুলে এক নায়ক তদন্ত কায়েম চালুকরে যা মনে চায় তাই করেছেন।



আরো সুত্রে জানা যায়, এই শিক্ষক এর বিরুদ্ধে সিলেট শিক্ষা বোর্ডের ডিজির কাছে অভিযোগ দেওয়া হয় এর পরিপ্রেক্ষিতে জেলা শিক্ষা অফিসে পাঠানো হয় তদন্তের জন্য জেলা শিক্ষা অফিসার নিজে প্রতিষ্ঠানে এসে সকল কাগজ দেখে বলেন উনি অবৈধ নিয়োগ নিয়েছেন বলে প্রমান পেয়েছেন।


হাজ্বী আঞ্জব আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রিয়াজুল করিম জানুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে বিধি অনুযায়ী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়। তিনি কোন অনিয়ম দুর্নীতি করেননি।


হাজ্বী আঞ্জব আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনসুর আহমদ আতিক বলেন, আগের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আওয়ামীলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীীতি করেছেন। তিনি দীর্ঘ ১৫ বছর প্রধান শিক্ষকের পদ দখল করেছিলেন। তার কাছে সবাই জিম্মি ছিল আওয়ামীলীগের পতনের পর আমি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করি, সেটি তদন্ত চলছে। তিনি একই সাথে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ও ইংরেজী শিক্ষকের পদে বেতন উত্তোলন করেন।


হবিগঞ্জ জেলা শিক্ষ অফিসার ফরিদা নাজমীন এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত এর জন্য একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছি এখন প্রতিবেদন পাইনি।


 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Alo News Admin

কমেন্ট বক্স

প্রতিবেদকের তথ্য

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ